Header Ads

শ্রীকৃষ্ণনামের মহিমা

শ্রীকৃষ্ণনামের মহিমা


কৃষ্ণচেতনা সর্ব বিজয়ীঃ

ভক্তির পথ আশ্রয় করলে আমাদের অন্তরাত্মার সম্পূর্ণ পরিবর্ত্তন ঘটে থাকে এবং ক্রমশঃ জড়জগতের যাবতীয় charm—প্রলোভন দূর হতে থাকে । ভেতরে একরকম সংগ্রাম চলতে থাকে এবং কৃষ্ণচেতনা যখন সাধকের চিত্তকে গ্রাস করে ফেলে, তখন আর যা কিছু চিন্তা ও ধারণা সবই চলে যায় । শ্রীমদ্ ভাগবতে এটি বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে,—
প্রবিষ্টঃ কর্ণরন্ধ্রেণ স্বানাং ভাবসরোরূহম্ ।
ধুনোতি শমলং কৃষ্ণঃ সলিলস্য যথা শরৎ ॥
(ভাঃ ২।৮।৫)
শরৎকাল এলেই জলের কাদাগুলো আপনিই তলায় পড়ে যায়, জল নির্মল হয়ে যায় । যখন কৃষ্ণচেতনা হৃদয়ে প্রবেশ করে, তখন আর সব কামনা-বাসনা, জানা-অজানা, সব চিন্তাধারা আপনা হতেই ক্রমশঃ মন থেকে সরে যায়, কৃষ্ণচিন্তাই হৃদয়টাকে পুরোপুরি অধিকার করে । কৃষ্ণের একবিন্দু কৃপা মন থেকে, হৃদয় থেকে সবকিছুকেই সরিয়ে নিজেই ভক্তের হৃদয় দখল করে ।
এইটাই কৃষ্ণচেতনার স্বভাব । কোন কিছুই তার সঙ্গে পাল্লা দিতে পারে না । সে তথাকথিত দেব-দেবী পূজাই হোক অথবা খৃষ্টান্, ইস্ লামধর্মধারণাই হোক—সবই মন থেকে চলে যায় । আস্তিকতার আর যত সব চিন্তা-চেতনা আছে, সবই কৃষ্ণচেতনার কাছে হার মেনে পালিয়ে যায় । কৃষ্ণের সৌন্দর্য্য ও মাধুর্য্যের কাছে কেউই দাঁড়াতে পারে না ।
সৌন্দর্য্য, মাধুর্য্য ও চমৎকারিতা সব শক্তিকেই হার মানায়—বশ করে ফেলে । আমরা ত’ বাস্তবিকই কেবল সৌন্দর্য্য, মাধুর্য্য, করুণা, ও প্রেমের পিয়াসী । আত্মস্বার্থ-ত্যাগের মধ্যে এমন বল ও ঔদার্য্য রয়েছে, তা সব কিছুর উপরেই জয়লাভ করে—সব অভাবকেই পূরণ করে নেয় । পাওয়ার চেয়ে দেওয়াতেই যে বেশী লাভ! অপ্রাকৃত প্রেম মানেই বাঁচার জন্য মরা, নিজের জন্য বাঁচা নয়, পরের জন্য বাঁচা । চরম ত্যাগ, চরম উৎসর্গ কেবল কৃষ্ণচেতনার মধ্যেই সম্ভব ।
কৃষ্ণচেতনার মধ্যে এমন সৌন্দর্য্য আছে, যার হৃদয়ে তার আবির্ভাব হয়, সে নিজের পরিচয় এমন কি নিজের সত্ত্বাও হারিয়ে ফেলে । সে পুরোপুরি আত্মবিস্মৃত হয়ে যায়, এমনই তার চমৎকারিতা । কে ই বা কৃষ্ণের কাছে দাঁড়ায় ? যে ভাবনাই আসুক, তার কাছে সবই নিরস্ত্র হয়ে য়ায় । যদি কোনও প্রকারে কৃষ্ণ হৃদয়ে প্রবিষ্ট হন, তা হলে আর কোন কিছুই সেখানে স্থান পায় না । সবই কৃষ্ণের অধিকারে এসে যায় । কৃষ্ণ এমনই উদার, এমনই সুন্দর, এমনই মধুর, এমনই সৌন্দর্য্য, সৌকুমার্য্য ও মাধুর্য্যের মূর্ত্তবিগ্রহ!

No comments

Theme images by sndrk. Powered by Blogger.