আধুনিক বিশ্বে হিংসা, ঘৃণা, দুষ্কর্ম বৃদ্ধির মুখ্য কারণ কি ।
আধুনিক বিশ্বে হিংসা, ঘৃণা, দুষ্কর্ম বৃদ্ধির মুখ্য কারণ কি
আধুনিক বিশ্বে হিংসা, ঘৃণা, দুষ্কর্ম বৃদ্ধির মুখ্য কারণ হল মাংসাহারের ফলে কোমল সৎচিন্তার বিনাশ এবং স্বার্থপরতা আদির বৃদ্ধি। হয় ততোই আরও বেড়ে ওঠে, কখনোই তার তৃপ্তি হয় না। বাসনার পথে আমিষ আহার নৈতিক এবং আধ্যাত্মিক পতনের কারণ আমিষ খাদ্য বাসনাসমূহকে উত্তেজিত করে এবং তা যতো ভোগ করা কোনো বাধা এলে ক্রোধ উৎপন্ন হয়, ক্রোধের ফলে ভালো-মন্দের বিচার নষ্ট হয়ে যায়, বুদ্ধিবিভ্রম ঘটে, তাতে পথভ্রষ্ট হয় অথবা সর্বনাশ হয়ে যায়।
সুতরাং আমরা দেখতে পাই যে, আমিষ আহারে অন্যান্য ক্ষতি ছাড়াও বিশ্বে হিংসা, অমানবিকতা, দুষ্কর্ম ইত্যাদি বৃদ্ধির একটি প্রধান কারণ এবং এটি মানুষকে সর্বনাশের পথে নিয়ে যায়। আমাদের কর্তব্য হল একে রোধ করা। আমরা যদি তা করতে সক্ষম না হই আমাকে এর ভয়ানক ফল ভুগতে হবে।
তাহলে আমাদের আগামী প্রজন্মে প্রায়শঃ দেখা যায় যে দুষ্কর্ম, ধর্ষণ, নির্দয়ভাবে হত্যা ইত্যাদি করে যেসব দুর্বৃত্ত, তারা সাধারণ অবস্থায় এই কাজ করে না। এই সব কাজের আগে তারা মদ্যপান ও মাংসাহার করে, তাতে তাদের বিবেক, মানবিকবোধ, নৈতিকতা নষ্ট হয়ে যায়, ফলে এই দুষ্কর্ম করা তাদের পক্ষে সহজ হয়ে যায়।
অর্থাৎ যখন কেউ এই অন্যায় কাজ করতে মন থেকে তৈরি থাকে না, তখন তার অন্তরের কথা অগ্রাহ্য করার জন্য এইসব পদার্থের উপভোগ করে। দুর্ভাগ্যের কথা যে, আজকাল লোকেরা ফ্যাসান, আধুনিকতা কিংবা নিজেদের আধুনিক দেখানোর জন্য আমিষ খাদ্য গ্রহণ করে এবং এটি সর্বজনবিদিত যে আজকে মানুষের নৈতিক স্তরের মানদণ্ড কোথায় নেমেছে ! নিজের নিজের অন্তর্মনই এটি ভালো করে জানে।
কিছু নিরামিষাশী ব্যক্তি আধুনিক হওয়ার জন্য নিরামিষ পদার্থ দ্বারা পশু-পক্ষীর আকৃতির খাদ্য তৈরি করে মাংসাহারীদের মতো ভোজন করেন, যেন তাঁরাও মাংসাহারী। এরূপ আহার যদিও স্বাস্থ্যের পক্ষে খারাপ নয়, কিন্তু চিন্তার দিক থেকে এটি অনুচিত। কারণ চিন্তাই আমাদের তদনুরূপ কর্মের পথে প্রেরণ করে। এরূপভাবে নিরামিষ আহার করলেও মনে তো এই চিন্তারই উদয় হয় যে আমরা প্রাণী বধ করে আনন্দে তা আহার করছি।
এই চিন্তাই আমাদের অহিংসা, দয়া, প্রেমের মতো গুণ থেকে অপসারিত করে ক্রমে হিংসা, ক্রূরতা ইত্যাদির দিকে প্রেরণ করে এবং অবশেষে যা আমাদের বা আমাদের বংশধরদের আমিষাশী করে তুলবে।
No comments