Header Ads

আমিষ আহার নৈতিক এবং আধ্যাত্মিক পতনের কারণ

আমিষ আহার নৈতিক এবং আধ্যাত্মিক পতনের কারণ


মানুষের চিন্তাই তার কর্মকে প্রভাবিত করে। যার মধ্যে অহিংসা, দয়া, পরোপকার ইত্যাদির চিন্তা থাকে, সে এমন কর্ম করবে না বা করাতে চাইবে না যাতে অন্য প্রাণী কষ্ট পায়। যার হৃদয় কোনো প্রাণীকে দুঃখ-কষ্টে দেখে দ্রবীভূত হয়, সেইরূপ চিন্তাযুক্ত মানুষ মাংস ভক্ষণের কথা চিন্তাই করতে পারে না।


নিজ স্বার্থের জন্য অন্যকে কষ্ট দিতে দ্বিধাবোধ করে না, তার কাছে মাংসাহার কেন, কোনো অনৈতিক কাজ করতেই সে পিছপা হয় না। যার মন পশুর বুকে ছুরি চালানোতে আহত হয় না, সে মানুষের ওপর গুলি বর্ষণ করতে কেন ভয় পাবে? যে নিজের স্বাদ এবং শরীরের পুষ্টির জন্য প্রাণীকে বধ করে তার মাংস খায়, সে তার অন্য আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য-ব্যবসা, পদ-প্রতিষ্ঠা ইত্যাদির লোভে যে কোনো হিংসা করতে বা করাতে পিছুপা হবে কেন ? এরূপ স্বার্থপর ব্যক্তি থেকে কি কখনও মর্যাদাপূর্ণ জীবন যাপনের আশা করা যায় ?


'মাংস মাংসাহারী মানুষ নির্দয় হয়ে যায় আর যার দয়া নেই তার ধর্মহীন হওয়াতে কোনো সন্দেহই থাকে না। মাংসাহারী ব্যক্তি ভুলে যায় যে, ভক্ষণ করে কতো বড়ো নির্দয় কাজ করছি। আমার তো কিছু সময়ের জন্য রসনার তৃপ্তি, ক্ষুণ্ণিবৃত্তি হচ্ছে ; কিন্তু বেচারী পশু বা পক্ষীর প্রাণ চিরকালের মতে চলে যাচ্ছে।' প্রাণনাশের মতো দুঃখ আর কী আছে ? জগতে সকল প্রাণীই প্রাণনাশের ভয় পায়।


অনিষ্টং সর্বভূতানাং মরণং নাম ভারত।


মৃত্যুকালে হি ভূতানাং সদ্যো জায়তে বেপথুঃ॥


(মহাভারত, অনুশাসনপর্ব, ১১৬।২৭) 'হে ভারত ! মৃত্যু সকল জীবের পক্ষেই অনিষ্টকর, মরণের সময় সকল জীবই সহসা কম্পিত হয়।


মাংসাহার দ্বারা মস্তিষ্কের সহ্যশীলতা এবং স্থৈর্য হ্রাস হয়, বাসনা এবং উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়, ক্রূরতা ও নির্দয়ভাব জন্ম নেয়। কোনো বালককে যখন প্রথম থেকেই মাংসাহারে অভ্যস্ত করানো হয়, তখন সে স্বার্থের জন্য অন্য জীবের মাংস খাওয়া, তাকে কষ্ট দেওয়া, মারা ইত্যাদি কাজ এতো সহজে করে যে কাউকে হত্যা করতে, হিংসার কাজ করতে তার কোনো অপরাধ বোধ আসে না।


অহিংসা, দয়া, পরোপকারের চিন্তা তার মাথায় আসে না। তার মধ্যে শুধু স্বার্থের চিন্তাই বেড়ে ওঠে, যা তাকে নিজের তুচ্ছ স্বার্থের জন্য জাতি, দেশেরও ক্ষতি করতে বাধা দেয় না।


No comments

Theme images by sndrk. Powered by Blogger.