Header Ads

কপালে টিপ পরায় কলেজ শিক্ষককে হয়রানির প্রতিবাদ, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি

কপালে টিপ পরায় কলেজ শিক্ষককে হয়রানির প্রতিবাদ, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি



কপালে টিপ পরায় নারীকে হেনস্তার ঘটনায় প্রতিবাদ ও এ ঘটনায় অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছে ।

বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ, নারীপক্ষ ও বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ।

এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, 'গণমাধ্যমের খবর থেকে জানা যায়, গত শনিবার সকাল সাড়ে ৮টায় তেজগাঁও কলেজের পাশে সেজান পয়েন্টে মোটরবাইকে বসে পুলিশের পোশাক পরিধেয় একজন তেজগাঁও কলেজের থিয়েটার অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের প্রভাষক লতা সমাদ্দারকে টিপ পরার কারণে যৌন হয়রানিমূলক উক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে যৌন হয়রানি করেছেন এবং এর প্রতিবাদ করতে গেলে তার পায়ের পাতার উপর দিয়ে বাইক চালিয়ে তাকে আহত করেছেন।'


জননিরাপত্তা প্রদানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বাহিনীর একজন সদস্যের এই যৌন হয়রানিমূলক, অসংবেদনশীল, নারীবিদ্বেষী এবং সন্ত্রাসীমুলক আচরণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান তারা।


বিবৃতিতে আরও বলা হয়, 'মুক্তিযুদ্ধে লাখো নারীর আত্মত্যাগের বিনিময়ে পাওয়া বাংলাদেশ রাষ্ট্র তার সংবিধানে নারী পুরুষের সমমর্যাদায় এবং স্বাধীনভাবে চলাচলের অধিকার প্রদান করেছে। কিন্তু এই ঘটনা থেকে দেখা যাচ্ছে যে, জননিরাপত্তায় নিয়োজিত বাহিনীর উক্ত সদস্য সংবিধান এবং মুক্তিযুদ্ধপরিপন্থী আচরণ করছে। আমরা আশংকা প্রকাশ করছি যে, দীর্ঘদিন ধরে এই ধরণের বাহিনীতে নারীর প্রতি কট্টর এবং মৌলবাদী চিন্তাধারণ করা ব্যক্তিদের নিয়োগ দেবার ফলে গতকালের ঘটনাটি ঘটেছে। আমরাই পারি জোট মনে করে, এটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং বাংলাদেশকে তালেবানি রাষ্ট্রে পরিণত করার অংশ হিসেবে এবং নারীর প্রতি বিভিন্ন ক্ষেত্রে যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের যথেষ্ট সংবেদনশীল দৃষ্টিভঙ্গি না থাকার কারণে গতকালের এই ঘটনাটি ঘটার পরিবেশ তৈরি হয়েছে।'


গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে তেজগাঁও কলেজের শিক্ষককে হয়রানির ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি দাবি করে বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ জানায়, সংবিধানের ২১ (২) ধারায় বর্ণিত আছে, 'সকল সময়ে জনগণের সেবা করিবার চেষ্টা করা প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিযুক্ত প্রত্যেক ব্যক্তির কর্তব্য'। সে অনুযায়ী টহলের দায়িত্বে থাকা পুলিশবাহিনীর একজন সদস্যের কাজ হলো আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যাতে বিঘ্নিত না হয় তার দেখভাল করা এবং নাগরিকদের স্বাভাবিক জীবনযাপন ও চলাফেরায় সহযোগিতা দেওয়া। কিন্তু তিনি স্পষ্টতই প্রজাতন্ত্রের চাকুরির সাংবিধানিক শর্ত লঙ্ঘন করেছেন, যা কোনো বিবেচনায় মারাত্মক অপরাধ।

নারীপক্ষ তাদের বিবৃতিতে জানায়, কপালে টিপ মেয়েদের সাজসজ্জার অংশ। এছাড়াও, হিন্দু বিবাহিত নারী তার ধর্মীয় বিশ্বাস এবং রীতি অনুযায়ী কপালে টিপ পরে থাকেন। এতে বাধা দেয়া বা টিটকারি করা অথবা তার উপর কোনরকম সহিংস আচরণ করা নারীর নিজ পছন্দমাফিক সাজসজ্জা এবং ধর্মীয় বিশ্বাসে আঘাত হানা। এটি কেবল কোনো একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, এটি ধর্মান্ধ ও নারীস্বাধীনতা বিরোধীদের এক গভীর ষড়যন্ত্র এবং নিরবচ্ছিন্ন অপতৎপরতা।

এই ঘটনার প্রতিবাদে আজ দুপুর ১টায় টিপ পরে নারীপক্ষ প্রতিবাদ অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে বলেও বিবৃতিতে জানানো হয়।


এদিকে, হয়রানির ঘটনায় জড়িত পুলিশ সদস্যকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে চিহ্নিত করে শাস্তির ব্যবস্থা নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ।


গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হিন্দু ও বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের নারীদের বিবাহের প্রতীক হিসেবে কপালে টিপ ও হাতে শাখা পরিধান তাদের প্রাত্যহিক জীবনের রীতি ও প্রথা এবং এটাকে তারা পারিবারিক মাঙ্গলিক বিষয় হিসেবে বিবেচনা করে। কলেজ শিক্ষক লতা সমাদ্দারের উপর সংঘটিত ঘটনা পুলিশ প্রশাসনের একাংশের চলমান সাম্প্রদায়িকতার নগ্ন রূপ।


No comments

Theme images by sndrk. Powered by Blogger.