Header Ads

সনাতনি হিন্দুরা উলুধ্বনি দেয় কেনো? উলুধ্বনি কি ? কিভাবে এটি এলো ?

সনাতনি হিন্দুরা উলুধ্বনি দেয় কেনো?
উলুধ্বনি কি ? কিভাবে এটি এলো ?


তাই চলুন আজকে আমরা উল্লেখ করবো বাঙালী মেয়েরা ঠিক কোন কারণে উলুধ্বনি দেয় এবং এর নানা উপকারিতার কথা।উলু ধ্বনির ব্যুৎপত্তিগত অর্থ:

ধ্বনিগত দিক দিয়ে বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় উলু ধ্বনি হলো ওঁ কার ধ্বনি। ওঁ- যা পরমব্রহ্মের নিয়ত স্বরূপ বলে হিন্দুধর্মে মান্য করা হয়।


অপরপক্ষে বৈষ্ণব ধর্মাবলম্বীদের মত হলো, উ হলো রাধা এবং লু হলো কৃষ্ণ তাই উলু ধ্বনির দ্বারা আমরা এই দুই যুগলকেই স্মরণ করি।


উলুধ্বনি অ, উ এবং ম এই তিনটি বর্ণ নিয়ে গঠিত। এই তিনটি ধ্বনি আত্তীকরনের মাধ্যমে উচ্চারণের একটি সংহতি তৈরি করে যা মহাশূন্যে ব্রহ্মনাদকে কম্পিত করে। একপক্ষে বলা যায় এটি মহাচৈতন্য জাগরণ এর উদ্ধোক।

অ-কার আপ্তি বা আদিমতত্ত্ব বা সূচনার প্রতীক। উ- কার সমৃদ্ধি বা উৎকর্ষ বা অভেদত্ত্বের প্রতীক। ম- কার মিতি বা অপিতি শক্তির প্রতীক বলে মনে করা হয়ে থাকে।


আধ্যাত্মিক কারণ:


উলু ধ্বনির অ, উ এবং ম এই তিনটি ধ্বনি কিন্তু সৃষ্টি,স্থিতি ও লয়কেও বোঝায়।অনেকে বলেন যে এটার দ্বারা ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও মহেশ্বরকে বোঝানো হয়।মান্ডুক্য উপনিষদেও এর উল্লেখ পাওয়া যায়।


উলু ধ্বনিতে যে শব্দ উৎপন্ন হয় তা কিন্তু আকাশ বাতাস কাঁপিয়ে কেবল একটি মাঙ্গলিক কাজের সূচনা করে তাই নয় একটা দৈব বাতাবরণ সৃষ্টি করে যার দ্বারা দেবতাদের আশীর্বাদ প্রাপ্তির একটি মাহেন্দ্রক্ষণ উপস্থিত হয়।


উলু ধ্বনির শব্দে শুভকাজের পবিত্রতা বহুগুণে বেড়ে এবং অশুভ শক্তি সেই জায়গায় আর না থাকতে পেরে বিতাড়িত হয় বলে মনে করা হয়।

প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় উলু ধ্বনি দেবার কারণ:


নানান প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন ঝড়, ভূমিকম্প ইত্যাদিতে উলু ধ্বনি দেবার চল রয়েছে সেই প্রাচীনকাল থেকেই। কিন্তু আমরা তার আসল কারণ না জেনেই সেগুলোকে কুসংস্কার ও অন্ধবিশ্বাস বলে উপহাস করি।


উলু ধ্বনি যে সময় থেকে দেয়া হতো সেই সময়ে ফেসবুক বা টুইটার এর অস্তিত্ব ছিলোনা। সেই সময়ের মানুষ গণমাধ্যমের একটি সংকেত হিসেবে এটিকে ব্যবহার করত।

এটি সমষ্টিগতভাবে কোনো উঁচু জায়গা থেকে করা হতো যাতে মানুষ নিজেদের ঘর-বাড়ি থেকে বেরিয়ে কোনো নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে পারে।বৈজ্ঞানিক দিকথেকেও এই বিপদ সংকেতের একটা ব্যাখ্যা মেলে এই কারণ দেখলে।


অন্যদিকে প্রাচীন সময়ে জঙ্গলে প্রচুর শ্বাপদ জন্তুর দ্বারা আক্রমণের সম্ভাবনা ছিল। উলু ধ্বনি দিলে সেই জানোয়ার কাছে আসত না সেই কারণেও এটি করা হতো।


অনেকে দেবদেবীদের কোপ থেকে কৃপা প্রার্থনা করার জন্য ও দুর্যোগের সময় উলু ধ্বনি করে থাকেন অবশ্য।


উলু ধ্বনির খুঁটিনাটি

উলু ধ্বনি হলো জিহ্বা কম্পনের ফলে সৃষ্ট উচ্চগ্রামের ভোকাল সাউন্ড যার উৎপত্তি মধ্যযুগে।


উলু ধ্বনির একটা সাউন্ড কোড থাকে যা ঝড় নামে খ্যাত। ঝড় বলতে বোঝায় একটি শ্বাস চক্রের সম্পূর্ণ হতে যতটা সময় লাগে সেই সময় মাত্রা।


গৃহপ্রবেশে ৫ ঝড় উলুধ্বনি দেওয়া হয়।


পূজায় ৩ ঝড় উলুধ্বনি দেয়া হয়।


ছেলে শিশুর জন্মের সময় ৯ ঝড়।


মেয়ে শিশুর জন্মের সময় ৭ ঝড়।


বিয়ের সময় ১৪ ঝড়।


ভূমিকম্পের সময় ঘনঘন উলুধ্বনির চল রয়েছে।


উলুধ্বনি দেওয়া হয় সাধারণত পূজায়, অন্নপ্রাশন, ভূমিকম্প আদি দুর্যোগ, কীর্তন, জন্মদিনে আশীর্বাদ বা বিবাহ আদি ধর্ম কর্মের সময়। শ্রাদ্ধ বা বাৎসরিক সংক্রান্ত অনুষ্ঠানে উলুধ্বনি বা হুলুধ্বনি দেওয়া হয় না।


 উলুধ্বনি কি ? কিভাবে এটি এলো ? খালি বাঙালী, ওড়িয়া, অসমীয়া ও তামিল দের মধ্যেই কেন উলুধ্বনি সীমাবদ্ধ ? উলুধ্বনি বা হুলুধ্বনি বা 'উলুজোগার' বলতে আমরা বুঝি জিহ্বা নাড়িয়ে একটানা 'উলু,উলু' শব্দ। সাধারণত মহিলারাই উলুধ্বনি দেন। পুরুষেরা উলুধ্বনি করলে সে নির্বংশ হয় । উলুধ্বনি সাধারণত পৌরাণীক জাতীয় কোনো শাস্ত্রে নেই। শাস্ত্রে হর্ষধ্বনি বা বিজয়সূচক ধবনির উল্লেখ আছে। সম্ভবত সেই হর্ষধ্বনি থেকেই উলুজোগার ধ্বনি এসেছে। হর্ষধ্বনি বলতে কেবল কিন্তু উলুজোগার বোঝায় না। হর্ষধ্বনি বলতে বোঝায় আনন্দে মুখের ভাষা প্রকাশ। সেটা জয় জয় ধ্বনি, জয়কার ইত্যাদিও হতে পারে। আদিম মানুষেরা মুখে একপ্রকার শব্দ করে শিকারে সাফল্য বা কোনো সঙ্কেত দিতো। উলুধ্বনি কেবল বাঙালী, তামিল, ওড়িয়া, অসমীয়া ও কিছু উপজাতি হিন্দুদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ । একদল পণ্ডিত বলেন পুরাকালে দানবরাজ শুম্ভ নিশুম্ভের হাতে রাজ্যপাট খুইয়ে দেবতারা ভগবতী মহামায়ার স্তব করেছিলেন। সেই স্তবে তুষ্ট হয়ে দেবীর আবির্ভাব হয়। শুম্ভ নিশুম্ভের অনুগত দুই দানব চন্ড, মুণ্ড দেবীর সাথে যুদ্ধ করতে এলে দেবীর থেকে প্রকট হন চামুণ্ডা দেবী। এই চামুণ্ডাদেবীকে অনেকে কালী বলে থাকেন। যাই হোক দেবীর খড়্গ প্রহারে দানব সেনারা ও চণ্ড মুণ্ড নিহত হলে দেবীর ডাকিনী, যক্ষিণী, শিব�

No comments

Theme images by sndrk. Powered by Blogger.