শুদ্ধ ভক্তির লক্ষণ গুলো কি কি?
শুদ্ধ ভক্তির লক্ষণ গুলো কি কি?
শুদ্ধ ভক্তিরা কি?
শুদ্ধ ভক্তির-ভক্তিসাহিত্যসিন্ধুশ্রীমদ্ভাগবতীর (৩২৯/১২-১৩) ভগবান কপিলদেব তাঁর মাতা দেবহুতিকে পারমাক তত্ত্বাবধায়ক সম্বন্ধে দেবার সময় শুভ ভগবদ্ভর বর্ণনা করেছেন—“হে মাত, যাঁরা আমার শুদ্ধ ভক্ত, এবং যাঁ পার্থিব কোন লাভের বাসনা বা বাসনাধারণ কোন আসক্তি নেই, চিত্তসর্বদাই সেবায় এত গভীর গ্লন যে, আমার কাছে থেকে আমার প্রতি অহৈতুকী ভক্তি ছাড়া আর আমি দেখছি না।
.এমন কি, ধামে সহবাস করার জন্য সৌভাগ্য পর্যন্ত আমার করতে না।" বাস করা এবং সাষ্টি বা ভগবানের প্রাপ্ত ঐশ্বর্য্য। ভগবদ্ভক্ত পাব সুখভোগের কথা থাকতেক, এই পাঁচটি মুক্তির কোনটি কামনা করেন না।
প্রীতি সহকারে ভগবানের সেবা করেই তিনি সম্পূর্ণ তৃপ্ত। এটিই হচ্ছে শুদ্ধ ভক্তির। শ্রীমদ্ভাগেবতে কপিলদেবের এই নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী ভক্তেরপূরর্থ মনোভাবটি, এবং ভক্তের বিপরীতে ভোটারও সমর্থন করেছেন।
শ্রীল গোলামী শাস্ত্রী-প্রমাণের মাধ্যমে ভক্তির বিভিন্ন রূপ বর্ণনা করেছেন। তিনি ধার্মিক ভক্তিরা যে মানুষটি আছে
১) শুদ্ধ ভক্তি ক্লেশঘ্নী, অন্য সব ধরনের প্রাকৃতিক ক্লেশ তৎক্ষণাৎ নিবৃত্তি করে।
(২) ভক্তি শুভদা, অন্যত্র সর্বতোভাবে মঙ্গলময়।
(৩) শুদ্ধ ভক্তি সান্দ্রানন্দবিশেষত্মা, অন্য শুদ্ধ ভক্তি দিব্য আনন্দ প্রদান করে।
(৪) শুদ্ধ ভক্তি সুদুর্লভা, অন্য শুদ্ধ ভক্তি লাভ করা অত্যন্ত দুর্লভ।
(৫) শুদ্ধ ভক্তি মোক্ষলঘুকৃৎ, অন্য শুদ্ধ ভক্তি মোক্ষকেও তুচ্ছ করে।
(৬) শুদ্ধ ভক্তি শ্রীকৃষ্ণকর্ষিণী, অন্য শ্রীকৃষ্ণকে অলৌকিক করার উপায়।
শ্রীকৃষ্ণ সর্ব্বকর্ষক, কিন্তু শুদ্ধ ভক্তি তাঁকেও অলোক করে। অন্যত্র ভক্তি শ্রীকৃষ্ণের শুক্র থেকেও বলেতী, কারণ তিনি হচ্ছেন শ্রীকৃষ্ণের অন্তর শক্তি।
ক্লেশঘ্নী (শুদ্ধ ভক্তি ক্লেশ নিবারণ করে)
ভগবদ্গীতা ভগবান লেখক যে, সমস্ত কার্যকলাপ পরিপাকে তাঁর শরণাগত হওয়া উচিত। সেই সঙ্গে তিনি এই জ্ঞাত করেছেন যে, এই ধরনের সমর্পিত আত্মাদের তিনি সমস্ত পাপ থেকে মুক্তি দেবেন। শ্রীল রূপ গোস্বামী বলেছেন, এই জন্মের পাপ ও পূর্বকৃত পাপ——দুই-ই ক্লাসের কারণ।
সাধারণত পাপ কর্ম অবিদ্যার ফলে সংঘটিত হয়। কিন্তু অবিদ্যার অজুহাত ফলাফল পাল্টা প্রতিক্রিয়া থেকে রেহাই পাওয়া যায় না। পাপ ফল দুই রকম—প্রাব্ধ ও অপ্রব্ধ। যে পাপের ফল আমরা বর্তমানে ভোগ করছি।
যা এখনও ভোগ করা হয়নি, সেই সঞ্চিত পাপ কর্মকে অপ্ররব্ধ বলা হয়। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, কোন দুর্বিষহ বৃত্তান্ত অপরাধ করা হয়েছে যেমন এখনও পড়েনি, কিন্তু যখন তাকে বলা হয়েছে, তখন তাকে দণ্ড দিতে হবে। এইভাবে আমাদের অব্ধ পাপের ফল আমরা প্রাপ্ত হব, আর আমাদের প্রারব্ধ পাপের ফল এখন আমরা ভোগ করছি।
এইভাবে পাপ কর্ম ও তার পরিণাম রূপী ক্লেশ ক্রমান্বয়ে মনে হয়। এইভাবে বাঁধ জীব এই সমস্ত পাপের ফলে জন্মান্তরে দুঃখভোগ করে। বর্তমানে পূর্ববর্তী পাপের ফল ভোগ করতে সে পরবর্তী জীবনের দুঃখ রূপী নতুন বীজ বপন করে। আত্মঘাতী রোগ, আইন সংক্রান্ত অভিযোগ, নীচকুলে অথবা বিদ্যা বা রূপের অভাব—এই সমস্ত প্রাপ্য কর্মের জন্ম।
পূর্বকৃত পাপ অনেক ফল আমরা বর্তমানে ভোগ করছি যে সমস্ত পাপ আমরা করছি, এবং তার ক্লেশ আমাদের দুর্ভোগ করতে হবে। কিন্তু আমরা যদি কৃষ্ণভাবনায় ভাবিত হই, তা হলে এই সমস্ত পাপের ফল অবিলম্বে হতে পারে।
তার চেষ্টায় শ্রীল রূপ গোমসী শ্রীমদ্ভাগবতে একাদশ চতুর্দশয়ের ঊনবিংশতি শ্লোকটি উদ্ধৃত করেছেন।
No comments